লকডাউনের খবরে শুনে বাড়লো নিত্যপণ্যের দাম

লকডাউনের খবরে শুনে বাড়লো নিত্যপণ্যের দাম

এক সপ্তাহের লকডাউনের খবরে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে সব চেয়ে বেশি বেড়েছে পিয়াজ ও সবজির দাম। পাশাপাশি বাজারে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গতকাল দিনভর শেষ মুহূর্তের এই কেনাকাটা করতে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে।

বাজারে দেখা গেছে, আলু, পিয়াজ, কাঁচামরিচের দাম আগের চেয়ে কেজিতে ১০/১২ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া বেশি দাম বেড়েছে মুরগির মাংসের, যা আগে ছিল ২৩০-২৫০ টাকা কেজি এখন দাম নিচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা কেজি। লকডাউনের ঘোষণায় হঠাৎ করে প্রতিকেজি চাল এক থেকে দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি শুরু হয়েছে।

রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল, পলাশী কাঁচাবাজারে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের ব্যস্ততার মাঝেও অনেকে কেনাকাটা করতে আসেন।

এদের বেশির ভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, আলু ও সবজি একটু বেশি করে কিনছিলেন।
ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানান, একদিকে মাসের শুরু অন্যদিকে সামনের সপ্তাহ থেকে রমজান। অনেকেই মাসের ও রোজার বাজার একসঙ্গে করছেন। তাই ক্রেতা কিছুটা বেশি। বাজারে আসা হাবীব বলেন, বাজার কয়েকদিন ধরেই করা হচ্ছে। কাল থেকে লকডাউন। তাছাড়া রোজা আসতেও বেশি দেরি নেই।

তাই বাজার একসঙ্গে করে রাখছি। আমরা বেশির ভাগ বাজার মাসের শুরুতেই করি। আরেক ক্রেতা জানান, লকডাউনের কারণে একসঙ্গে বেশি করে কেনাকাটা করতে এসেছেন। কয়েকটা পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডাল, পিয়াজ, আলু ও সবজি নিয়ে যাচ্ছি। এরমধ্যে সবজি আর পিয়াজের দাম বেড়েছে। তাছাড়া লকডাউন কতদিন থাকে সেটির কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বাজার কিছুটা বেশিই করে নিয়ে নিচ্ছি।

কাওরান বাজারের কাঁচাবাজারেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনের চেয়ে বেশি ভিড় ছিল। নাখাল পাড়ার বাসিন্দা মালেক বলেন, লকডাউনের খবর শুনে বাজার করতে এসেছি। গত পরশু বাজার করেছিলাম গরুর মাংস ৬০০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পিয়াজ ৩৫ টাকা, মরিচ ৩০ টাকা। আর এখন কিনলাম আলু ২৫ টাকা, পিয়াজ ৪৫ টাকা, মরিচ ৪০ টাকা। গত ১ দিনেই অনেকটা দাম বেড়েছে।

খুচরা চাল-ডাল ব্যবসায়ী আজম বলেন, লকডাউনে মানুষ বেশি কেনাকাটা করছে। ফলে পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে এক টাকা থেকে দুই টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। বাজারে চালের কোনো সংকট নেই। কিন্তু পাইকারি ও খুচরা দোকানে লোকের ভিড় সকাল থেকেই।

এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে, তাই অতিরিক্ত নিত্যপণ্য না কেনার আহ্বান জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. আব্দুল লতিফ বকসীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত পর্যাপ্ত; স্বাভাবিক ক্রয়ে আস্থা রাখুন। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, এ বছর নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি থাকার কারণে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বাড়িয়েছে টিসিবি। রমজানে যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থাকে, সেগুলোর ১০ থেকে ১২ শতাংশ টিসিবির মজুত রয়েছে।

এদিকে লকডাউন চলাকালে ৭ দিন শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শপিংমল বন্ধ থাকলেও অনলাইনের মাধ্যমে পাইকারি ও খুচরা পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে দোকানগুলো। সেক্ষেত্রে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password