সিজার মানে একটা মায়ের মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত প্রতিবন্ধি হয়ে বেঁচে থাকা

সিজার মানে একটা মায়ের মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত প্রতিবন্ধি হয়ে বেঁচে থাকা

আরে যাদের নরমালে বেবী হয় তাদের নাড়ি ছেড়া ধন হয়,,,,, আর যাদের সিজার হয় তাদের হয়তো নাড়ি ছেড়া হয়না কিন্তু নাড়ি কাটা ধন হয়।সিজারে কীসের কষ্ট শুধু পেট কাটে!!! ৭টা পর্দা কেটে বেবীটাকে দুনিয়াতে আনতে হয়।হয়তোবা সিজার করার আগে এ্যানেসথেসিয়ার জন্য বুঝা যায়না পেট কাটাটা। আধা ঘন্টার ভিতর ৩টা স্ল্যালাইন শেষ হয়।কিন্তু মোটা সিরিন্জের মেরুদন্ডে দেওয়া এই ইনজেকশনটা সারাজীবন কষ্ট দেয়।

কখনো অবস হয়ে থাকে আবার কখনো বসা থেকে উঠা যায়না,,,,,কাপড় কাচা যায়না,,,,ভারী কিছু উঠানো যায়না তবুও আমরা সব কিছু করি এবং করার চেষ্টা করি। করতেও হবে কারণ আমরা মেয়ে । বিশ্বাস কর যখন অবসের মেয়াদটা চলে যায় তখন একটা গলা কাটা মুরগীর মতো ছটফট করতে হয়।

আপনজন ছেড়ে পোস্ট অপারেটিভ রুমে থাকতে হয় ২৪ ঘন্টায় ২৪ স্যালাইন চলে আর ইনজেকশন কাটা জায়গায় কী যে কষ্ট বলার মতো না,,,, তার সাথে খিচুনি, শরীরের কাপুনি। হাতে ক্যানোলাই স্যালাইন চলছে,,, প্রসাবের রাস্তায় ক্যাথেতার নিথর শরীর থরথর কাঁপছে,,, মাথাটাও ভারী হয়ে আছে তবুও শত কষ্ট উপেক্ষা করে বাচ্চাকে বেস্ট ফিডিং করায়।

মানুষ ভাবে না জানি কতোটা সহজ এই সিজার,কিন্তু যার হয় সেই মা বুঝে এর যন্ত্রনা।সিজারের কস্ট সারাটা জিবন বয়ে যেতে হয়।

সিজার কতবার করা যাবে?

সিজারিয়ান পদ্ধতিতে কতবার ডেলিভারি করা যাবে তা জরায়ুর অবস্থা, মূত্রাশয়ের অবস্থা, জরায়ুর আশপাশের অর্গানগুলোর সঙ্গে জরায়ু কতটা জড়িয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। স্বাভাবিক ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হলে মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য সিজারিয়ান পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। তবে তিন বারের বেশি সিজার করা নিরাপদ নয়। অধিক সিজারের ফলে বেশ কিছু জটিলতাসহ কিছু ঝুঁকি থাকে।

সিজার কেন করা হয়?

অনেক সময় দেখা যায় নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও প্রসব ব্যথা শুরু না হলে।গর্ভে থাকা অবস্থায় কোনো কারণে যদি শিশুর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।প্রসব ব্যথা ৮-১২ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি প্রসবের উন্নতি না হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মা ও শিশুর জীবনের ঝুঁকি থাকলেগর্ভফুলের অবস্থান জরায়ুর মুখে থাকলে। এছাড়া গর্ভের শিশুটি যদি অস্বাভাবিক অবস্থানে থাকে।প্রথম এক বা দুটি শিশুর জন্ম যদি সিজারিয়ান পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। এসকল ক্ষেত্রে শিশু জন্মের জন্য সিজারিয়ান পদ্ধতিতে ডেলিভারি করা হয়ে থাকে।

কিছু জটিলতা,প্রসবে জটিলতা

প্রতিটি সিজারিয়ানের সাথে সাথে প্রসবের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। বেড়ে যায় প্রসবের সময়। একটি সিজারিয়ান এর আগের বারের চাইতে বেশী সময় লাগতে পারে। কারণ সিজারিয়ান করা হলে মায়ের উদরে ক্ষত সৃষ্টি হয়এর ফলে অপারেশনের সময় ঘণ্টা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত রক্তপাত

যেকোনো সিজারই নরমাল ডেলিভারির চাইতে রক্তপাত বেশী হয়। কিন্তু সিজারের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে ৩.৩ ভাগ মায়ের এবং তৃতীয় সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে তা বেড়ে ৭.৯ ভাগ মায়ের হতে পারে।

অতিরিক্ত সার্জারি

সিজারের সাথে অতিরিক্ত কিছু অপারেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। প্রতিবার সিজারিয়ানের সাথে সাথে মায়ের জরায়ুতে ক্ষতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেক সময় এসব ক্ষত শরীরের অন্য অঙ্গের সাথে লেগে যেতে পারে। যার ফলে সিজারের সময় সেই অঙ্গের কাটা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে আবার সার্জারি করার প্রয়োজন পড়তে পারে।

মূত্রথলীর ক্ষতি

সিজারিয়ানের আরেকটি কমন ঝুঁকি হলো মূত্রথলীর ক্ষতি বা ব্লাডার ইনজুরি। ব্লাডার ইনজুরি প্রথম সিজারের ক্ষেত্রেও হতে পারে তবে এর সম্ভাবনা খুব কম। তবে প্রতিবার সিজার করার সাথে সাথে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

দেরি সুস্থ হওয়া

সাধারণ প্রসবের থেকে সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে সেড়ে উঠতে বেশী সময় লাগে। সিজারের সংখ্যা বাড়ার সাথে এই সেড়ে ওঠার সময় ও বাড়তে থাকে। এছাড়া একাধিকবার সিজার করা হলে তা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।

রক্ত জমাট বাঁধা

সিজারের একটি সাধারণ ঝুঁকি হলো রক্ত জমাট বাঁধা। এটাই সম্ভবত সবচাইতে ভয়ের কারণ একই সাথে মাতৃ মৃত্যুর কারণও। রক্ত জমাট বাঁধার কারণে পা ফুলে যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।

প্লাসেন্টার সমস্যা

সিজার করার ফলে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া, প্লাসেন্টা অ্যাক্রিটা এবং প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন এর সমস্যাগুলো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password