প্রাচীন আমলের জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও হাড়গোড়ের সন্ধান

প্রাচীন আমলের জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও হাড়গোড়ের সন্ধান

নদ খননের সময় জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও মানুষের হাড়গোড়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভৈরব উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন ভৈরব নদ খননের সময় এগুলো দেখতে পান শ্রমিকরা। ধারণা করা হচ্ছে- জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও হাড়গোড় ২০০ বছরের পুরনো।

ব্রিটিশ আমলে ভৈরব নদ দিয়ে ভারতের কলকাতায় বাণিজ্য করার সময় জাহাজটি ডুবে যায় বলে প্রবীণরা জানান। জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নারী-পুরুষ ভিড় জমান ভৈরবপাড়ে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, উপজেলার সুবোলপুরে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরে ভৈরব নদ খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। শুক্রবার সকালে উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন নীল কুঠির নিচে ড্রেজার মেশিনে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উঠে আসে।

সেখানে পাওয়া যায় বিশাল আকারের লোহার চাকা, শেকল, জাহাজের বিভিন্ন অংশ ও মানুষের হাড়গোড়। কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলেজের পাশেই ছিল ব্রিটিশদের নীলকুঠির দ্বিতল ভবন। বিগত সরকারের সময় ভবনটি নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। প্রবীণদের কাছে শুনেছি ভারত থেকে এই নীলকুঠিতে ইংরেজরা জাহাজে ভারত যাওয়া-আসা করতেন।

ভৈরব নদ দিয়ে কার্পাসডাঙ্গা থেকে কলকাতায় বাণিজ্য করতেন তারা। ওই সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা কোনো দুর্ঘটনায় হয়তো জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, এ জাহাজে মূল্যবান সম্পদ থাকতে পারে। মাটি খনন করলে হয়তো আরও মূল্যবান সম্পদ পাওয়া যাবে। ভৈরব নদ খননের সময় জাহাজের যে ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যাচ্ছে সেটি ব্রিটিশদের পণ্যবাহী জাহাজের হয়ে থাকতে পারে।

পার্শ্ববর্তী বাঘাডাঙ্গা গ্রামের শাহাবুল হক জানান, আমার প্রয়াত বাবা প্রবীণদের কাছে শুনেছিলেন এখানে জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। তিনি জীবদ্দশায় আমাদের কাছে এটা জানিয়েছিলেন। আমাদের ধারণা জাহাজডুবির ঘটনাটি কয়েকশ বছর আগের হয়ে থাকতে পারে। ভৈরব নদসংলগ্ন কোমরপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মোফাজ্জেল হোসেন জানান, আমার দাদা ব্রিটিশ সাহেবদের কর্মচারী ছিলেন।

আমার বাবার কাছে শুনেছি এখানে ঝড়ে ইংরেজদের একটি জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। পরে জাহাজটি আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল করিম বিশ্বাস জানান, জাহাজটির মালামাল ২০০ বছরেরও বেশি পুরোনো বলে ধারণা করা হচ্ছে। আপাতত জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও মানুষের হাড়গোড় উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে রাখার জন্য দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাছলিমা আক্তার বলেন, ভৈরব নদে পাওয়া ব্রিটিশদের এসব মালামালের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। তবে যেগুলো পাওয়া গেছে সাবধানতার সঙ্গে ও যত্ন করে রাখতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password