মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নড়াইলের লোহাগড়ায় এক মাদ্রাসাছাত্রকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মণ্ডলবাগ আকতার হোসেন এতিমখানা ও রহমানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। নিহত ছাত্র আরিফ বিল্লাহ (৯) উপজেলার লংকারচর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।

পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ১০ মাস আগে আরিফ বিল্লাহকে মণ্ডলবাগ আকতার হোসেন এতিমখানা ও রহমানিয়া মাদ্রাসায় হাফেজি শাখায় ভর্তি করা হয়। জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি ওই মাদ্রাসার এক ছাত্রের দুইশ টাকা চুরি হয়ে যায়।

বিষয়টি সে মাদ্রাসার শিক্ষকদের জানায়। মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ ওই রাত ১১টার দিকে মাদ্রাসার সব ছাত্রকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নামাজে বসানোর মতো করে বসিয়ে বাঁশের কঞ্চি ও লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এ সময় ছাত্র আরিফ বিল্লাহ শিক্ষক আব্দুল্লাহর বেধড়ক মারধরে গুরুতর আহত হয়।

ঘটনাটি পরিবারের কাউকে না জানাতে ছাত্রদের হুমকি দেয় ওই মাদ্রাসাশিক্ষক। একপর্যায়ে আরিফ অসুস্থ হয়ে কয়েক দিন লজিংবাড়িতে খেতে না যাওয়ায় গত শুক্রবার সকালে লজিং বাড়ির মালিক হাফিজারের স্ত্রী মাদ্রাসায় খোঁজখবর নিতে যান। সেখানে গিয়ে আরিফকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মাদ্রাসায় শুয়ে থাকতে দেখেন এবং বিষয়টি আরিফের মা, বাবা ও তার ফুফুকে জানান।

পরে তিনি অসুস্থ আরিফকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী লাহুড়িয়া গ্রামের আরিফের ফুফু রুনা খানম ওই রাতেই লজিং বাড়ি থেকে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেন। লাহুড়িয়ার ফুফু বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আরিফের মৃত্য হয়।

আরিফের পিতা নূর ইসলাম ও তার মা অভিযোগ করে বলেন, মাদ্রাসাশিক্ষকের বেধড়ক মারধরের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের কাউকে বিষয়টি না জানতে দিয়ে তাকে মাদ্রাসায় আটক করে রাখে। আমার ছেলের সময়মতো চিকিৎসা না করানোর কারণে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে।

আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক আব্দুল্লাহ ও সুপার আশরাফ আলীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন চুরির ঘটনায় মাদ্রাসার সব ছাত্রকে মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোববার রাতে নিহত ছাত্র আরিফের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password