পাবনায় শিক্ষক ছেলের লাথিতে আহত হয়েছেন বাবা

পাবনায় শিক্ষক ছেলের লাথিতে আহত হয়েছেন বাবা

পাবনার চাটমোহরে ছেলের লাথিতে আহত হয়েছেন বাবা। আতাউর রহমান (৫৭) নামের ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে মজনুর রহমানকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠয়েছে পুলিশ। ১২ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে চাটমোহর উপজেলার মহেলা বাজার এলাকায় হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটে। ১৩ অক্টোবর দুপুরে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন আতাউর রহমান। পরে আসামিকে গ্রেফতারের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অভিযুক্ত মজনুর রহমান পেশায় একজন শিক্ষক। বাবাকে লাথি মারাসহ লাঞ্ছিত করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মহেলা বাজার পোস্ট অফিসে সাব পোস্ট মাস্টার পদে চাকরি করেন আতাউর রহমান। তার ছেলে মজনুর রহমান চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ট্রেড ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত। তাদের মধ্যে জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল। মঙ্গলবার সকালে মজনুর রহমান তার বাবার কর্মস্থলে যান। সেখানে তিনি বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে কিল ঘুষি মারেন।

মজনুর রহমান পোস্ট অফিসের কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বাবার কাছ থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেন। পরে মোবাইল ফোনটি নিয়ে মোটরসাইকেলে উঠতে চাইলে তাকে বাধা দেন বাবা। মোবাইলটি ফেরত চেয়ে বাবা আতাউর রহমান কখনো ছেলের পা ধরে রাখেন, কখনো তার মোটরসাইকেল টেনে ধরেন। ওই সময় ক্ষুব্ধ মজনুর রহমান তার বাবাকে বাবাকে লাথি মারেন। পরে আশপাশের লোকজন এসে মজনুরকে নিবৃত করে তাড়িয়ে দেয়।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি চাটমোহর থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বাবা। পরে পুলিশ মজনুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ১৩ অক্টোবর দুপুরে বাবার করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার পর স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে অভিযুক্ত মজনুর রহমান বলেন, অভিযোগ সত্য নয়।

তার ভাগ্নে পরিকল্পনা করে ভিডিওটি করেছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাবা আতাউর রহমান বলেন, ছেলের কাছ থেকে এমন আচরণ তিনি আশা করেননি। এতে তিনি মানসিকভাবে কষ্ট পেয়েছেন। সে কারণে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। এ ঘটনায় বিচার দাবি করেন ওই বাবা। চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।

একজন শিক্ষকের কাছ থেকে বাবার প্রতি এমন আচরণ কাম্য নয়। তিনি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, মামলার পর ছেলে মজনুর রহমানকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈকত ইসলাম বলেন, শুনলাম বাবা ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password